গাজার মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উয়েফা মুখ খুলল

গাজার মানবিক বিপর্যয় নিয়ে উয়েফা
মুখ খুল্ও
	atOptions = {
		'key' : '3fa70c8b02b99aceaf5c9be6ccda9d40',
		'format' : 'iframe',
		'height' : 300,
		'width' : 160,
		'params' : {}
	};









ফুটবল ঐতিহ্যগতভাবে "রাজনীতি থেকে মুক্ত" ছিল, কিন্তু উয়েফা হঠাৎ করেই তার দীর্ঘদিনের অবস্থান থেকে সরে এসেছে। গাজার বর্তমান, নৃশংস মানবিক পরিস্থিতির প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপীয় ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা একটি অনন্য অবস্থান বেছে নিয়েছে: এটি ফুটবল মাঠকে রক্তপাত বন্ধের দাবির একটি প্ল্যাটফর্মে পরিণত করেছে।
  • বুধবার ইতালির উদিনে স্টাদিও ফ্রিউলিতে পিএসজি ও টটেনহ্যাম হটস্পারের মধ্যকার উয়েফা সুপার কাপ ফাইনালের আগে মাঠে বড় একটি ব্যানারে লেখা ছিল— 'Stop killing children – Stop killing civilians' (শিশু হত্যা বন্ধ করো – বেসামরিক হত্যা বন্ধ করো)। খেলোয়াড়দের সারিবদ্ধ দাঁড়ানোর সময় এই বার্তাটি স্পষ্টভাবে প্রদর্শিত হয়। ম্যাচ-পরবর্তী মেডেল প্রদান অনুষ্ঠানে গাজার দুই শরণার্থী শিশু অংশ নেয়, যা উয়েফার পক্ষ থেকে এক বিরল প্রতীকী উদ্যোগ।

  • উয়েফার ইতিহাসে এমন অবস্থান প্রায় নজিরবিহীন। সাধারণত সংস্থাটি 'নো ডিসক্রিমিনেশন' প্রচারণা ও অন্যান্য মানবিক উদ্যোগে সক্রিয় থাকলেও, রাজনৈতিক মাত্রা যুক্ত সংঘাতগুলোতে সরাসরি অবস্থান নেওয়া থেকে বিরত থেকেছে। তাদের নিজস্ব বিধি অনুযায়ী, ম্যাচ শুরুর আগে, চলাকালে বা পরে স্টেডিয়ামের ভেতরে রাজনৈতিক, আদর্শিক বা ধর্মীয় বার্তা প্রদর্শন নিষিদ্ধ, এমনকি এর লঙ্ঘনে জরিমানা বা শাস্তির ব্যবস্থাও রয়েছে। কিন্তু উদিনের এই বার্তাটি চলমান গাজা পরিস্থিতিকে সরাসরি উল্লেখ করায় বিষয়টি একেবারেই ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে।

  • এ ঘটনা ঘটল এমন সময়ে, যখন সাবেক ফিলিস্তিনি ফুটবলার সুলেইমান আল-ওবাইদের মৃত্যু নিয়ে উয়েফার অবস্থান সমালোচনার মুখে। গত শনিবার লিভারপুল ও মিসরের ফরোয়ার্ড মোহাম্মদ সালাহ উয়েফার প্রকাশিত শোকবার্তায় ওবাইদের মৃত্যুর কারণ ও প্রেক্ষাপট উল্লেখ না করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

  • উয়েফা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ লিখেছিল, 'বিদায় সুলেইমান আল-ওবাইদ, "প্যালেস্টাইনের পেলে।" এক প্রতিভা, যিনি অন্ধকার সময়েও অসংখ্য শিশুকে আশা জুগিয়েছেন।'






  • ৪১ বছর বয়সী ওবাইদ ২০০৭ সালে জাতীয় দলের হয়ে অভিষেকের পর নিয়মিত খেলেছেন। গত সপ্তাহে দক্ষিণ গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় তিনি নিহত হন, যখন সাধারণ মানুষ মানবিক সহায়তা নেওয়ার জন্য সারিবদ্ধভাবে অপেক্ষা করছিলেন। ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, ওবাইদ জাতীয় দলের হয়ে ২৪ ম্যাচ খেলেছেন, ক্যারিয়ারে শতাধিক গোল করেছেন, যার মধ্যে ২০১০ সালের ওয়েস্ট এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে ইয়েমেনের বিপক্ষে তার করা একটি দুর্দান্ত সিজর-কিক গোল এখনও স্মরণীয়।


  • সালাহ তাঁর পোস্টে প্রশ্ন তোলেন, 'আমাদের কি বলতে পারবেন, তিনি কীভাবে, কোথায় এবং কেন মারা গেলেন?' সংঘাতপূর্ণ অঞ্চলের ক্রীড়াবিদদের বাস্তবতা স্বীকার করার আহ্বান জানিয়ে।

  • উয়েফার এই প্রতীকী অবস্থান গাজার সহিংসতার বিরুদ্ধে বার্তা ও ওবাইদকে স্মরণ, প্রতিষ্ঠানটির সাধারণত রাজনৈতিক ইস্যু থেকে দূরে থাকার নীতির বাইরে গিয়ে এক বিরল পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।

  • এর আগে উয়েফা সাধারণত প্রকাশ্য বার্তা দিয়েছে বর্ণবাদের বিরুদ্ধে বা শরণার্থীদের সমর্থনে, তবে কখনোই সরাসরি তাদের দুর্দশার কারণ উল্লেখ করেনি। রাজনৈতিক ব্যানার প্রদর্শনের দায়ে ক্লাব বা জাতীয় দলকে শাস্তি দেওয়ার নজিরও রয়েছে। ফলে বুধবারের ঘটনা সংস্থার নীতিতে এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যতিক্রম হিসেবে ধরা পড়েছে।









মানবিক সংস্থাগুলোর তথ্য অনুযায়ী, গত মে মাসের শেষ দিকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েল সমর্থিত গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশনের ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র চালু হওয়ার পর থেকে সহায়তা নিতে আসা বেসামরিক মানুষের ওপর হামলায় ১,৩০০-রও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।







Post a Comment

Previous Post Next Post